ওয়েব সার্ভিসের জন্য এপিআই কেন প্রয়োজন ?
দুনিয়া অনেক এগিয়ে গেছে মানুষ অনেক স্মার্ট হয়ে গেছে । এই স্মার্ট দুনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে এপিআই কেন প্রয়োজন তার উত্তর আমরা নিজেরাই । নিউজ,বিনোদন,যোগাযোগ,ব্যাংকিং, বেচা-কেনা সহ প্রাত্যহিক কাজের জন্য আমরা দিন দিন ওয়েব এর নির্ভরশীল হয়ে যাচ্ছি । তার সাথে আমরা নিজেদের অভ্যস্ত করে তুলছি নতুন নতুন প্রযুক্তির সাথে যেগুলো ইন্টারনেট ব্যবহারে প্রতিনিয়ত একটি নতুন মাত্রা যোগ করে যাচ্ছে । শুধু কম্পিউটারের উপর আমরা এখন আর নির্ভর করি না। এন্ড্রয়েড, আইফোন , ট্যাবলেট এবং স্মার্ট ডিভাইসগুলো এখন কম্পিউটারের স্থান দখল করে নিয়েছে । আমরা স্মার্ট ডিভাইসগুলোতেই নিজেদের কাজ সম্পন্ন করতে এখন বেশি পছন্দ করি।
পরিসংখানে দেখা যায় ২০১৪ সালেই মোবাইলের ব্যবহার ডেস্কটপকে ছাড়িয়ে গেছে । সোশাল নেটওয়ার্কিং, নিউজ, হেল্থ, গেমিং এমনকি শপিং করতেও স্মার্ট ডিভাইসগুলো ব্যবহার অনেক বেশি । পরিসংখানে দেখা যায় শপিং এর জন্য ডেস্কটপ ইউজার মাত্র ৮.৫২% ।
প্রযুক্তির অগ্রগতি যে হারে বেড়েছে তাতে সহজেই অনুমান করতে পারি যে অচিরেই নতুন কোন প্রযুক্তি এসে হয়তো স্মার্টফোনকে ছাড়িয়ে যাবে। একটি ডিভাইস হয়তো আজকে ভাল চলছে কিন্তু কালকে সেটার ব্যবহার নাও থাকতে পারে। কিন্তু ওয়েবের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ঠিক উল্টো, দিন দিন ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছেই। এখন আপনি যদি চান যে আপনি একটি ওয়েব সার্ভিস বানাবেন যেটা বর্তমানের সকল স্মার্ট ডিভাইসগুলোতে চলবে অর্থাৎ সিস্টেমটি প্লাটফরর্ম ইন্ডিপেন্ডেন্ট করতে চান তবে তা আপনি কিভাবে করবেন ? কিংবা ফেসবুকের কথা ভাবুন, এন্ড্রয়েড, আইফোন ওয়েব এর জন্য তারা নিশ্চই তিনটি আলাদা ফেসবুক তৈরী করেনি । বরং একটি ফেসবুকই তিনটি ভিন্ন বডিতে ডিসপ্লে করছে ।
আপনার এ্যাপ্লিকেশনটি এপিআই ভিত্তিক হলে আপনি এ সুবিধাগুলো পেতে পারেন । আপনার সার্ভিসকে অন্য কোন সিস্টেমে ইন্টিগ্রেট করতে শুধু মাত্র একটি এপিআই এর প্রয়োজন যা দুটি সার্ভিসের মধ্যে একটি কমিউনিকেশন গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে ।
আপনার ওয়েব সার্ভিসটি যদি সব প্লাটফর্ম এর জন্য ওপেন রাখতে চান তবে ঐ প্লাটর্ফম এর এপ্লিকেশন কে আপনার এপিআই এর সাথে জুড়ে দিলেই কাজ শেষ ।
কিছু জনপ্রিয় এপিআই :
১। গুগল ম্যাপ এপিআই: এই এপিআই এর মাধ্যমে ডেভেলপাররা যে কোন ওয়েব পেজে গুগল ম্যাপ ইন্টিগ্রেড করতে পারবেন । মোবাইল ডিভাইসগুলোতে জিপিএস মনিটরিং সহ রোড ডাইরেকশন এবং আরো সব অসাধারন ট্রাকিং এ্যাপ এটি একটি অসাধারন এপিআই।
২। ইউটিউব এপিআই : ইউটিউবের ভিডিও এবং ইউটিউবের বিভিন্ন ফাংশানালিটি ওয়েবসাইট কিংবা এ্যাপে ইন্ট্রিগেট করা যাবে। এই এপিআইতে ইউটিউব এনালাইটিক্স, ডাটা এপিআই এবং লাইভ স্ট্রিম এপিআই সহ অন্যান্য সুবিধা রয়েছে।
ম্যাপ এবং ইউটিউব এপিআই ছাড়াও গুগলের অনেক এপিআই আছে যেগুলো ব্যবহৃত হয়েছে হাজার হাজার ওয়েব সার্ভিসে । গুগল এপিআই ব্যবহারের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন এই সাইট টি তে।
৩। ফেসবুক এপিআই: ফেসবুকে লগিন, স্ট্যাটস আপডেট, নিউজ ফিড, লাইক-কমেন্ট, মেজেজিং সহ ফেসবুকে অন্যান্য ফাংশনালিটি কোন ওয়েব সার্ভিসে বা মোবাইল এ্যাপে ইন্টিগ্রেশন অনেক সহজ করে দিয়েছে এই এপিআই।
ফেসবুক গ্রাফ এপিআই ব্যবহারের পরিসংখ্যান পাবেন এখানে।
৪। টুইটার এপিআই : টুইটার দুইটা এপিআই প্রোভাইড করে। রেস্ট এপিআই এর মাধ্যমে টুইটারের কোর ডাটা এক্সেস করা যাবে আর সার্চ এপিআই এর মাধ্যমে টুইট সার্স এবং ট্রেন্ড ডাটা আপডেট পাওয়া যাবে ।
৫। আমাজন এড এপিআই : আমাজনের বিভিন্ন প্রোডাক্ট আপনার সার্ভিসে এড করে খুব সহজেই একটি এফ্লিয়েট ই-কমার্স সাইট তৈরী করতে পারবেন এই এপিআই এর মাধ্যমে ।
৬। পেপাল এপিআই: এটি দিয়ে যেকোন সার্ভিসে অনলাইন অর্ডার-পেমেন্ট ইন্টিগ্রেট করতে পারবেন ।
এবার একটু চিন্তা করে দেখুন যদি পৃথীবিতে কোন পেমেন্ট গেটওয়ে এপিআই না থাকতো তাহলে টাকা পয়সা লেনদেনের প্রত্যেক টি সার্ভিসের [উদাহরন – ইকমার্স] জন্য আলাদা করে পেমেন্ট গেটওয়ে বানাতে হত ।
আমি Bikroy.com বা BdJobs.com এর মত অথবা আরো সাধারন একটি ওয়েব সার্ভিস বানাতে চাই, আমার জন্য এপিআই কেন প্রয়োজন?
ধরে নিলাম যে বিক্রয় ডট কমের কোন এ্যাপ নেই । স্মার্ট ডিভাইসগুলোর ব্যবহার দেখে তারা একটি এ্যাপ এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করল । তাই তারা একটি এ্যাপ বানানোর চিন্তা করল যেটা লোড করা ডাটা ক্যাশ এ সেভ করে রাখবে এবং শুধু মাত্র নতুন ডাটা গুলো ডাউনলোড করবে । ব্যবহারকারী যে কোন ডিল কে বুকমার্ক করে রাখতে পারবে । ব্যবহারকারী যে কোন ডিলের জন্য এলার্ট একটিভেট করতে পারবেন, উদাহরন : XXX মডেলের এন্ড্রয়েড সেট বিক্রির পোস্ট আসলে ঐ ইউজার কে নোটিফিকেশন এ জানিয়ে দিবে । অনুরুপ ভাবে বিডি জবস ইউজাররে জন্য উপযুক্ত নতুন জব নটিফিকেশনে জানিয়ে দিতে পারে । তাহলে এ্যাপ কিভাবে বিক্রয় ডট কমের ডাটা এক্সেস করে ইউজারকে এ সুবিধাগুলো দিতে পারে ? কিভাবে তারা তাদের সার্ভিসটি সকল প্লাটফর্মের জন্য একই ভাবে প্রোভাইড করা যেতে পারে। সহজ সমাধান হল তারা নিজেদের জন্য একটি প্রইভেট এপিআই তৈরী করে তার মাধ্যমে এ্যাপ এবং ওয়েব সার্ভসের মধ্যে একটি ভালোবাসার বণ্ধন [তুমি আমার আমি তোমার] স্থাপন করতে পারে । কিংবা এনালাইটিক্স অথবা এফ্লিয়েট সার্ভিস এর জন্য পাবলিক এপিআই তৈরী করে অন্যদের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারে ।
মানুষের প্রয়োজন প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয় । এই কথা মাথায় রেখেই আপনাকে একটি সিস্টেম ডেভেলপ করতে হবে । আপনি পিএইচপি বা অন্য কোন ল্যাঙ্গুয়েজে একটি ওয়েবসার্ভিস বানালেন, পরবর্তীতে এটি কে একটি অন্য প্লাটফর্মগুলোতে ইন্টিগ্রেট করতে দেখা যাবে হয়তো আপনার পুরো সিস্টেমটা আবার নতুন করে করতে চচ্ছে । এপিআই কে কেন্দ্র করে এপ্লিকেশন বানানোর একটি বড় সুবিধা হল, আপনি ফাংশনালিটিগুলো এমন ভাবেই ডেভেলপ করবেন যাতে এটি যেকোন সিস্টেমেই ইন্টিগ্রেট করা যায় । শুধুমাত্র একটি এপিআই আপনার অনেক কাজ এবং সময় বাচিয়ে দিতে পারে ।
“শুধুমাত্র একটি এপিআই আপনার অনেক কাজ এবং সময় বাচিয়ে দিতে পারে”
— স্যালুট —
🙂
nothing to say,
just awesome,
keep it up bro,
it is a really helpful article .
thanks a lot